শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৬

কবিতার প্রহর ১৯

বারুদগন্ধী মানুষের দেশে

আল মাহমুদ



শুধু ঝরে পড়া আর মরে যাওয়া ছাড়া অন্য কিছু দেখাও আমাকে
হে বারুদগন্ধী মানচিত্র, কেন এত প্রাণের পিপাসা
চারদিকে চেয়ে দেখি গর্ত শুধু, ডিম রাখা দোয়েলের বাসা
আমার আত্মার ছবি, এই ঝরা আর মরার বিপাকে!
লক্ষ লক্ষ পাখি বুঝি ডিম রেখে উড়ে গেছে দূরে।
দেখি চেয়ে পাতা ঝরে, ফুল ঝরে, ঝরে যায় কুঁড়ি
হাওয়ায় খঞ্জনার গন্ধ লেগে আছে।  অদৃশ্য নূপুরী
সেই পক্ষী ফেরেনি তো নিজ নীড়ে
আমার আত্মায়।
হে বারুদগন্ধী মানচিত্র বন্ধ কর মৃত্যুর তামাশা
বন্ধ হোক ঝরে পড়া,  মরে যাওয়া হাওয়ার ক্রন্দন
এই অন্ধ চোখ দু'টি  হয়ে যাক হেমন্তের খুব ভোরবেলা
তোমার সবুজ থেকে
খুলে ফেল মৃত্যুর মেখলা।

কবিতার প্রহর ১৮

অসমাপ্ত

আল মাহমুদ

 

যতো দেখি, মনে কোন সমাপ্তি জাগে না।
আমার কি আরম্ভ ও ছিলো?
মনে পড়ে ধুলো পায়ে হাঁটা
আর বিশ্রামের ঠাঁইগুলো ছবি হয়ে ভাসে।
চিরকাল পাখি ওড়া
চিরকাল নদী, নৌকা।
তরঙ্গের মাঝখানে ছায়া পড়ে, ছলকায়
দীর্ঘ এক দর্পিত মাস্তুল -
এই আমি। নিরারম্ভ।
অনি:শেষ আত্মার আওয়াজ।

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৬

টুকরো জীবন ৪

শরতের বিকাল গুলো বড্ড পানসে আজকাল।
একঝাক রঙিন ঘুড়ি বুকে নিয়ে স্বপ্নাতুর আকাশের আনত দৃষ্টি,
ক্ষণিকের ব্যবধানেই,
কেমন কাটা ঘুড়ির শুণ্যতা পুষে নিয়ে হারিয়ে যায়  
ঘোলাটে মেঘের আড়ে,
কোন তরঙ্গঢঙে উদ্বেলিত হয়ে নয়!

ভেজা কাকটার গৃহী হওয়ার শখ ছিল,
কিন্তু কোথায় এক আকিঞ্চন স্বপ্নের মৃত্যুতে,
বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটারা
খুব করে নাড়িয়ে দিয়ে গেলো
জানালার বা'দিকের ঐ কদম গাছটা।

তার পরের গল্পের খোঁজ আর কেউ রাখে না,
গড়িয়ে যাওয়া দিন-রাতে তো আর কোন ব্যত্যয় ঘটে না।
অগুনতি রাতের হাল ভেঙে,
হৃদয়ের কাঠঠোকরা রা যে নোড়ায় জোয়ার এনেছিল,
সেখানে এখন ভাটির টান।

সে টান বড় শক্ত, মায়াহীন।
রাখেনি বালুকাবেলায় নিঃসঙ্গ গাঙচিলের শেষ পদচিহ্ন টুকুও...