রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৩

জীবন ঘড়ি

সাড়ে নয়টায় পরীক্ষা। ইতোমধ্যে ৯.২০ হয়ে গেছে। বার বার হাতঘড়িটা দেখছি। হলের গেট দিয়ে দ্রুত বের হয়েই রিকশা নিলাম। যদিও ৫-৬ মিনিটের হাঁটা রাস্তা। তবুও সেমিস্টার ফাইনাল বলে কথা। ব্যাটারিচালিত রিকশায় হয়ত ২-৩ মিনিটেই পৌঁছে যাব।
রিকশায় উঠেই নোটগুলো ব্যাগ থেকে বের করলাম। উদ্দেশ্য শেষ কয়টা মিনিটও কাজে লাগানোর। বার বার হাতঘড়িটা দেখছি।  হঠাৎ খেয়াল করলাম রিকশায় গান বাজছে। টেনশনে হয়ত এতক্ষণ শুনিনি। গান শোনা ছেড়েছি বেশিদিন হয়নি, তারপরও এ গান কখনো শুনেছি বলে মনে হয়না। খেয়াল করে দেখলাম গানের কথাগুলো অনেকটা এমন 'জীবন ঘড়িতে দেখছনি মন, বাজে এখন কয়টা'। কেমন জানি অদ্ভুত একটা মিল পেলাম যেখানে আমার দৃষ্টি হাতঘড়িটায় নিবদ্ধ।

আসলেই তো জীবন ঘড়িতে এখন কয়টা বাজে? এমনও তো হতে পারে যে দশ মিনিটের জন্য আমার এত তাড়াহুড়া সে দশমিনিট সময়ও আমার জীবন ঘড়িতে নেই। অথচ সেদিকে তো কোন খেয়ালই নেই। দুনিয়ার সামান্য এক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির অন্ত নেই। সত্যিই যদি আমার ঘড়িতে সময় ফুরিয়ে আসে, তাহলে কি হবে? মহাপরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়ার কথা চিন্তারও যে ফুরসৎ হয়নি আমার। কি জমা দেব আমি সেই কঠিন মুহূর্তে? সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারকের সামনে? আমার পুরো খাতাই যে খালি পরে রইলো। কি অজুহাত দেব আমি আমার এত বছর সময়ের?

রিকশাওয়ালা মামার ডাকে সম্বিৎ ফিরে পেলাম। দেখি ডিপার্টমেন্টের সামনে এসে পড়েছি। ৩ মিনিটেই চিন্তার গভীরে চলে গিয়েছিলাম। ভাড়া মিটিয়ে নামতেই দেখি ৯.২৫ প্রায়। আরে, আমার না পরীক্ষা।

আবার দৌড়,
দৌড় এ নশ্বর পৃথিবীর পেছনে......


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন