বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৩

আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল

হলে থাকার একটা সুবিধা আছে। বিভিন্ন রকমের মানুষের বৈচিত্র্য সহজেই চোখে পড়ে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। হঠাৎ একজন সামনে দিয়ে গান গাইতে গাইতে চলে গেল (যদিও একটু আগেই তাকে দেখলাম ফোনে তুমুল ঝগড়ায় ব্যস্ত),
"আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল,
শুধাইল না তো কেহ"
কিছুদিন আগেও এটা আমার বেশ পছন্দের গান ছিল। এখন মনে হয় এসব গানে মানুষ কি খুঁজে বেড়ায়? নিজ হাতে কষ্ট কপচানো ছাড়া তো আমি কিছুই দেখিনা। সত্যি কথা বলতে কি, দুনিয়ার মানুষের কাছে সুখ আর অনুগ্রহ খুঁজলে তো অবস্থাটা এমনি হওয়ার কথা। তবু আমরা মানুষেরা ব্যাকুল হয়ে ছুটতে থাকি দুনিয়ার পেছনে। কোন একটা সমস্যায় পড়লেই চিন্তায় পড়ে যাই, কার কাছে গেলে এটার সমাধান হতে পারে? প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এলেই দেখা যায়, দূর-দূরান্ত থেকে বাসভর্তি মানুষ সিলেট এ আসে মাজারের উদ্দেশ্যে। মোমবাতি বা আগরবাতি কিনে তারা দিনের বেলাতেও মাজারের দেয়ালে লাগিয়ে দিয়ে যায় তাও যথেষ্ট ভাবগাম্ভীর্যের সাথে। অথচ, এত কাছে রয়েছেন আমাদের রব, যাকে ডাকতে কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই, কোন আড়ম্বরের দরকার পড়েনা, যিনি সর্বশ্রোতা, যিনি হৃদয়ের গোপন প্রকোষ্ঠের খবর সম্পর্কেও অবহিত, সেই মহান সৃষ্টিকর্তার কথাই আমরা ভুলে যাই! তাই হয়ত প্রকৃত শান্তি আমরা খুঁজে পাইনা।

"Verily, in the remembrance of Allaah do hearts find rest."
 Al-Quraan (13;28)
মাঝে মাঝে 'হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল' হই না যে তা কিন্তু না। তবে, হৃদয়ের ব্যাকুলতা স্রষ্টার কাছে ব্যক্ত করার মাঝেই রয়েছে অপার্থিব এক আনন্দ, যা হয়ত কবিতা বা গানের ভাষায় ধরা পড়ার নয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন